,

নারী-পুরুষ ভেদে হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গে ভিন্নতা

সময় ডেস্ক : বিশ্ববিখ্যাত জার্নাল ল্যান্সেট জানিয়েছে, ভারতীয় উপমহাদেশে নারীদের হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার হার বেড়েছে। নারীদের যে উপসর্গ দেখা যায়, তা পুরুষদের তুলনায় ভিন্ন হতে পারে। তাই উপসর্গ না চিনে এর ভুল ব্যাখ্যা দাঁড় করালে ফলাফল হতে পারে ভয়াবহ। বিস্তারিত জানিয়েছেন অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ।
পুরুষদের উপসর্গের মধ্যে থাকে বুকে চাপ চাপ ব্যথা বা গুঁড়িয়ে দেওয়ার অনুভূতি। এই ধরনের ব্যথা নারীদের না-ও থাকতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ অনেক সময় অস্পষ্ট থাকে। যেমন—বমি বমি ভাব, পিঠ ব্যথা, চোয়াল ব্যথা, মাথা ঝিমঝিম, মাথা হালকা লাগা, বুকের নিচের দিকে ব্যথা ও ঘাম হওয়া। এই উপসর্গগুলো চিনে রাখা জরুরি।
যেসব কারণ ঝুঁকি বাড়ায় : কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ ও স্থূলতা ছাড়াও যেসব কারণ নারীদের জন্য হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। ডায়াবেটিস, বিষন্নতা, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, মানসিক চাপ, ধূমপান, নিষ্ক্রিয় জীবনযাপন।
এ ছাড়া ৪৫ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সে নারীদের মেনোপজ হয়। এ কারণে ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমে যাওয়ায় দেখা দেয় ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম। প্রচণ্ড মানসিক চাপের কারণে এটি ঘটে থাকে। মেনোপজ হওয়া নারীদের হৃদযন্ত্রে রক্ত পাম্প করার মূল কক্ষটি বেশ দুর্বল হলে ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম দেখা দেয়।
সর্বপ্রথম জাপানে এটি শনাক্ত করা হয় ১৯৯০ সালে। ভয়, শোক, প্রচণ্ড রাগ বা শকের কারণেও এমন হতে পারে। অতিরিক্ত স্ট্রেস হরমোন এড্রেনালিনের প্রভাবে এমন হতে পারে। মানসিক চাপ মোকাবেলার জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
গর্ভের জটিলতা থেকেও হতে পারে হার্ট অ্যাটাক। গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ থাকলে ঝুঁকি বাড়ে। সব বয়সী নারীকেই হার্টের যত্ন নিতে হবে।
প্রতিরোধে করণীয় : শেষ সময়ে ইমার্জেন্সিতে না দৌড়ে জীবনযাপনে পরিবর্তন আনায় মনোযোগী হতে হবে। শরীরচর্চা করুন। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটতে হবে। অফিসে কাজের মধ্যেও বিরতি নিয়ে পায়চারি করা। লাঞ্চ আওয়ারে হাঁটা যেতে পারে। লিফটে না উঠে সিঁড়ি বেয়ে উঠুন। মানসিক চাপ কমাতে ইয়োগা আর ব্রিদিং এক্সারসাইজ করুন। শরীরের বাড়তি মেদ ঝেড়ে ফেলতে হার্টের জন্য উপকারী এমন ডায়েট মেনে চলুন। তেলে ভাজা খাবার, ফাস্ট ফুড, চিনি, বেশি লবণ, চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর